মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১০৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। বিগত একশ বছরেও এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেনি দেশটির বাসিন্দারা। মাত্র ২০ সেকেন্ডেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কয়েকটি শহর। অনেকে ঘুমের মধ্যেই প্রাণ হারান। ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো অনেকে চাপা পড়ে আছেন। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Advertisement
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ১১ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রথম ভূমিকম্পটির ১৯ মিনিট পর আরেকটি ভূকম্পন হয়। রিখটার স্কেলে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯। রাতে প্রাণরক্ষায় অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। শনিবারও শত শত মানুষকে সড়কের পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপির।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্যমতে, মরক্কোর চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেচ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলাস পর্বতমালায় ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মারাকেচ, আল-হাউজ, ওয়ারজাজেট, আজিলাল, চিচাউয়া, তারউদান্ত এলাকায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটেছে পাহাড়ি এলাকায়, যেখানে দ্রুত পৌঁছানো কঠিন।
মারাকেচের বাসিন্দারা জানান, ভূমিকম্পের কারণে প্রাচীন এ শহরের বেশকিছু ভবন ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, মসজিদের একটি মিনার ভেঙে পড়েছে। কিছু ভাঙাচোরা গাড়ির ওপর এর ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
মারাকেচের বাসিন্দা ইদ ওয়াজিজ হাসান বলেন, এখানকার বাড়িঘরগুলো গাদাগাদি করে তৈরি করা। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ সরানোর মতো ভারী সরঞ্জামাদি মানুষের কাছে নেই। তারা খালি হাতেই ধ্বংসাবশেষ সরানোর চেষ্টা করছেন।
আরেক বাসিন্দা ব্রাহিম হিম্মি জানান, তিনি শহরটিতে বেশকিছু অ্যাম্বুলেন্স আসা-যাওয়া করতে দেখেছেন। অনেক ভবনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবারও ভূকম্পের আশঙ্কায় মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন।
৪৩ বছর বয়সি হাউদা হাফসি বলেন, ঘরের সিলিং থেকে ঝাড়বাতি ভেঙে পড়ার পর আমি দৌড়ে বাইরে চলে আসি। আমি এখনো সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় আছি। আমাদের ভয় লাগছে।
ডালিলা ফাহেম নামের আরেক নারী বলেন, তার বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। রাতে ভূমিকম্পের সময় জেগে ছিলেন ডালিলা। তিনি মনে করেন, এর জন্যই প্রাণে বেঁচে গেছেন। ডালিলা বলেন, ভাগ্য ভালো, তখনো আমি ঘুমাইনি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- এম জহির
মোবাইলঃ 01716-918211
মেইলঃdailysomoyerchokh@gmail.com
কপিরাইট © ২০২৩ সময়ের চোখ